রাবেয়ার স্বপ্নপূরণ

Omar Golam Rabbany

রাবেয়া আমার অর্ধাঙ্গী যার মুখের হাসি অর্জন করা অনেক সাধারণ একটি কাজ। তবে এতে যে প্রশান্তি তা বলে বোঝানোর মতো না। কাজের সুবাদে বিভিন্ন জেলায় আমি গিয়েছি। সব সময় ভিডিও কলে আমার সাথে উপভোগ করার চেষ্টা করতো। সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, কুষ্টিয়া, বান্দরবান, কুমিল্লা। ও এমন ভাবে উপভোগ করে যেন ও সেখানেই আছে। মোবাইল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে হতো আর ও ম্যাপ দেখে দেখে আমাকে বলতো। তবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে দাড়িয়ে আমি শুধু ওকে দেখাতে পেরেছি সেন্ট মার্টিন ঐই ই ই দিকে। ওর হতাশ উত্তরটি ছিলো জুম করলে দেখা যায় না? জানি না সেদিন ইচ্ছা করেছিলো দেখাই জুম করে। আমার চাকরি পরিবর্তন এর সাথে সাথে আমার ভ্রমণও বন্ধ হয়ে যায়। তবে ওর এই বায়না দিন দিন ডানা মেলে ব্যাপক হয়ে যায়। আবদার করে বসে ঢাকা - কক্সবাজার প্লেনে গিয়ে পরে জাহাজে সেন্ট মার্টিন যাবো আমরা। হয়তো সেন্ট মার্টিন এয়ারপোর্ট থাকলে সেই আবদার ই করে নিতো। তবে আমার কম বেতনে প্লেনে তো দূর বাসে যাওয়ার জন্যও হিমশিম খেতে হবে। আচ্ছা আম্মা তো কখনো প্লেনে উঠে নাই। মা কেও কি নিয়ে যাওয়া যায়? আচ্ছা প্লেন ভাড়া আবার কমবে কবে? চট্রগ্রাম থেকে কি কম খরচে প্লেনে যাওয়া যাবে? জানো সেন্ট মার্টিনের যাওয়ার জাহাজ বন্ধ করে দিয়েছে? আচ্ছা এক বার প্লেনে উঠে পরে ট্রলারে বাজেট ট্যুর দিলে কেমন হয়? আমরা রাতে গিয়ে না থাকলে তো খরচ কিছুটা কমে নাকি? কক্সবাজার শুধুশুধু এর থেকে সোজা সেন্ট মার্টিন যাবো ঠিক আছে? এমন হাজারো উক্তি আর প্রশ্নে সেন্ট মার্টিন হয়ে পড়েছে এক সপ্নের নাম ওর কাছে। যদিও বিগত দেড় বছর বলতে বলতে এখন আর বলে না তেমন।শেষ বার বলেছিলো আচ্ছা শীতে নন এসি আর অফ সিজনে গেলে তো খরচ কম হবে।আমি উত্তর দিয়েছিলাম টাকা হলেই যাবো। যদিও আমারও ব্যাপক ইচ্ছা আছে। বালির সমুদ্র সৈকতে বসে হয়তো দুইজনে গবেষণা করে ফেলতেও পারি এ পানি এত নীল কেন। কিংবা বাধ্য করা হতে পারে তারা মাছ দেখানোর। যদিও আমিও কখনো দেখিনি সরাসরি।তবে ওকে বলেছি এইখানে পাওয়া যায়। শামুক দিয়ে মালা বানানোর আমার বৃথা অপচেষ্টা। কিংবা ছেড়া দ্বীপের পাথরের উপর বসে ফেসবুকের প্রোফাইল ছবি খুঁজে বেড়ানো। ইয়া বড় বড় টুপি আর সান গ্লাস পরে ছবি তোলা। অস্তমিত সূর্য হয়তো দুইজনে মিলে হাত দিয়ে আটকেও দিতে পারি ক্ষণিকের জন্য। মার্টিন এর নির্জন রাতে খোলা বালিতে শুয়ে সাগর আর আকাশ উপভোগ করা। বিদায় ঘণ্টায় হয়তো জাহাজের পেছনের গাংচিল দের বিদায়ী অভ্যর্থনা গ্রহণ। পরিশেষে কক্সবাজার এর সমুদ্রের পানিতে দুইজনের পা ভিজিয়ে আবারও যান্ত্রিক জীবনে যোগদান যেখানে মনে মনে বলবো সেই রকমের মজা হয়েছে।

শেয়ার

Copyright © The Daily Star 2023